www.notundesh.com

২য় বর্ষ সংখ্যা ২৫, জানুয়ারী ১৯, ২০১১ । বুধবার 

পোশাকের প্রভাব: নিজের মনে, অন্যের মনে

মো. রহমত উল্লাহ্

পোশাক অর্থ সভ্য সমাজের উপযুক্ত জামা-কাপড়। কোন পোশাক নিয়ে পৃথিবিতে আসেনা না মানুষ। পোশাক দিয়ে জাগ্রত করা হয় লজ্জা বোধ। করা হয় সভ্য সমাজের উপযোগি। মনের উপর বিস্তৃত হয় পোশাকের প্রভাব।

যুদ্ধের পোশাক পরলে সৈনিকের মনে বৃদ্ধি পায় শত্রু হননের সাহস। পুলিশের পোশাকে কাউকে দেখলেই ভয় পায় অপরাধি। উলঙ্গ নারি বা পুরুষকে নির্বিঘেœ রাস্তায় চলাফেরা করতে দেখলে পাগল মনে করে ভয় পায় অথবা  পাশ কাটায় অনেকেই। সুস্থ হলেও শুধু পোশাকহীনতার করণে অন্যরা ভেবে নেয় সে মানসিক ভারসাম্যহীন। অর্ধ উলঙ্গকে ভাবতে পারে অর্ধ পাগল। এই রূপ মানুষ পাগল না হলে, তার মনে কাজ করবে লজ্জা বোধ। অন্যরা তাকে ভেবে নিবে লজ্জাহীন। 

অশ্লিল পোশাক নিজের ও অন্যের মনে জাগাতে পারে অপকর্মের মনোভাব। ন্যায়নীতি বোধ মজবুত না থাকলে ভেঙ্গে যেতে পারে বিবেকর বাঁধ। পোশাক স্বল্পতার কারণে খেলার চেয়ে বেশি দৃষ্টি চলে যায় খেলোয়ারে শরীরে। শিল্প শৈলির চেয়ে বেশি চোখ পড়ে শিল্পির পোশাকবিহীন অঙ্গে। অশালীন পোশাকে লোপ পায় লজ্জা বোধ এবং তৈরি হয় নিজের শরীরের প্রতি অন্যকে আকৃষ্ট করার মনোভাব। এমন পোশাক অন্যের মনে শ্রদ্ধার চেয়ে কুভাবনাই জাগায় বেশি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শালিন পোশাক নিজের মনের পবিত্রতা বৃদ্ধি করে। অন্যের মনে প্রাথমিক শ্রদ্ধা জাগায়। অপরিচ্ছন্ন পোশাক নিজের ও অন্যের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে। জরাজীর্ণ জামা মানুষকে হীনমন্যতায় ভোগায়। দামি পোশাক পরিহিত মানুষকে ভিক্ষক মনে হয় না। বরং ভিক্ষা চাইলে ঠকবাজ মনে হয়।

অতি দামি পোশাকে অহংকারি হয় অনেকের অন্তর। একই রকম পোশাকে দমিয়ে রাখে পরস্পরের ব্যবধানিক মনোভাব। নতুন পোশাক পরলে প্রফুল্ল হয় নিজের মন। অন্যরাও ভাগ বসায় তার খুশিতে। মনে কষ্টও পেতে পারে পরশ্রীকাতর কেউ কেউ। ধর্মীয় পোশাকে প্রকৃত ধার্মিকের মনে বৃদ্ধি পায় ধর্মানুভূতি, ভন্ডের মনে চাঙ্গা হয় ভণ্ডামি। ভিন্ন জাতি বা  সমাজের পোশাক-আশাকে ভোতা হয় আপন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ। রঙিন পোশাক রঙিয়ে তুলে মন। শুভ চিন্তা জাগায় শোভন পোশাক।

 [লেখক: শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, গল্পকার, ছড়াকার, এবং তালিকাভুক্ত গীতিকার- বাংলাদেশ টেলিভিশন ও       বাংলাদেশ বেতার।  অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা।]  md.rahamotullah52@gmail.com

Phone- 01711147570