০১ আগস্ট ২০১০
শ্রেণীকক্ষে লেখাপড়া শিক্ষার্থীদের অধিকার
অধ্যক্ষ মো.
রহমত উল্লাহ্
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা
গত
১৭
আগস্ট
২০১০
তারিখে
জাতীয়
শিক্ষা
ব্যবস্থাপনা
একাডেমির
কোর্স
ও
প্রসাশনিক
ভবন
উদ্বোধনকালে
প্রধান
অতিথির
বক্তৃতায়
শিক্ষকদের
শিক্ষা
বাণিজ্য,
ভর্তি
বণিজ্য,
কন্সালটেন্সি,
প্রাভেট
টিউশনি,
কোচিং
ইত্যদিতে
অসন্তোষ
প্রকাশ
করে
বলেছেন-
‘১৯৭৫-এর পরবর্তী
সরকারগুলো
যোগোপযোগী
এবং
সঠিক
পদক্ষেপ
না
নেওয়ায়
দেশের
শিক্ষাব্যবস্থা
এক
ধরনের
লক্ষ্যহীনতার
দিকে
এগিয়ে
গেছে। ফলে
প্রকৃত
শিক্ষার
পরিবর্তে
এসেছে
শিক্ষাবাণিজ্য। আমাদের
নতুন
প্রজন্মকে
দেয়া
হয়েছে
বিকৃত
শিক্ষা
যা
মানুষের
চরিত্রকে
বিকৃত
করে। শিক্ষকদের
আদর্শ
ও
নীতিবোধ
লোপ
পেয়েছে। আজকাল
প্রাইভেট
টিউটরের
কাছে
কিংবা
কোচিং
সেন্টারে
পড়া
শিক্ষার্থীদের
জন্য
বাধ্যতামূলক
করা
হয়েছে। অন্যথায়
ছাত্র-ছাত্রীরা
পাশ
পর্যন্ত
করতে
পারে
না। বর্তমান
সরকার
শিক্ষাক্ষেত্রে
সব
ধরনের
অব্যবস্থা
দূর
করে
শৃঙ্খলা
ফিরিয়ে
আনতে
বদ্ধপরিকর’
[সূত্র-
দৈনিক
ইত্তেফাক,
১৮
আগস্ট
২০১০]।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়ের
বক্তব্যে
একটা
সত্য
পরিষ্কার
ফুঠে
উঠেছে
যে,
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
গুলোতে
কর্মরত
শিক্ষকগণের
শিক্ষকতার
যোগ্যতা
প্রশ্নবিদ্ধ। ‘শিক্ষকদের
আদর্শ
ও
নীতিবোধ
লোপ
পেয়েছে’। আসলে
যাদের
কারণে
আজ
শিক্ষকসমাজ
এত
সমালোচিত
তাদের
সুনীতি,
সতাদর্শ
ও
মূল্যবোধ
কখনো
ছিল
না। লক্ষ্যহীন
শিক্ষাব্যবস্থার
ভিতর
দিয়ে
তারা
হাত
করেছে
শিক্ষাসনদ
ও
শিক্ষকতা
পেশা। তারা
শিক্ষকতাকে
শিক্ষকতা
হিসেবে
নেয়নি,
চাকরি
হিসেবে
নিয়েছে। মানুষ
গড়ার
কারিগর
না
হয়ে,
হয়েছে
অমানুষ
করার
গুরু!
অন্য
চাকরিতে
যেতে
পারলে
হয়ত
তারা
আরো
বেশি
দুর্নীতি
করতো। তাতে
অবশ্য
তারা
বিকৃত
শিক্ষা
দিয়ে
তৈরি
করতে
পারতো
না
এত
বিকৃত
চরিত্রের
নাগরিক। সমাজের
সর্বক্ষেত্রে
ছড়িয়ে
দিতে
পারতো
না
এত
নৈরাজ্য
সৃষ্টিকারি। তারপরও
একটি
কথা
সত্য
যে,
অনেক
প্রবীন
এবং
কিছু
কিছু
নবীন
শিক্ষক
আছেন
যাঁরা
আসলেই
সুযোগ্য
শিক্ষক। তবে
তাঁরা
বিভিন্ন
দুষ্টচত্রে“র চাপে
অত্যন্ত
কর্নাড। শিক্ষাক্ষেত্রে
সব
ধরনের
অব্যবস্থা
দূর
করে
শৃঙ্খলা
ফিরিয়ে
আনতে
হলে
অবশ্যই
যথাযথ
মূল্যায়ণ
করতে
হবে
তাঁদেরকে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
জনাব
মো.
মোতাহার
হোসেন
এম.পি.
গত
০১
সেপ্টেম্বর
২০১০
তারিখে
জাতীয়
প্রেস
ক্লাবে
আয়োজিত
‘শিক্ষার
মানোন্নয়ন
ও
বর্তমান
শিক্ষাব্যবস্থার
সমস্যা
নিরসনে
করণীয়’
শীর্ষক
আলোচনা
সভায়
প্রধান
অতিথির
বক্তব্যে
বলেছেন-
‘ বাণিজ্যিক
ভাবে
পরিচালিত
দেশের
সকল
কোচিং
সেন্টার
অনতিবিলম্বে
বন্ধ
করা
হবে। শিক্ষা
নিয়ে
কাউকে
বাণিজ্য
করতে
দেওয়া
হবে
না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
গুলোতে
কর্মরত
শিক্ষকদের
যোগ্যতা
অবশ্যই
পরীক্ষা
করা
উচিত। প্রতিযোগিতায়
টিকতে
না
পারলে
তাদেরকে
প্রতিষ্ঠান
থেকে
বাদ
দিতে
হবে’
[সূত্র-
দৈনিক
ভোরের
ডাক,
০২
সেপ্টেম্বর
২০১০]। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
গুলোতে
কর্মরত
শিক্ষকদের
যোগ্যতা
পরীক্ষা করে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারলে বাদ দেওয়া উচিৎ হলেও তা অত সহজ নয়। এক্ষেত্রে ভাল
কিছু করার আন্তরিক সদিচ্ছা থাকলে
বরং
নতুন
নিয়োগে
অযোগ্যদের
আগমনের
পথ
রুদ্ধ করে যোগ্যদের অধিক্য বৃদ্ধি করাই উত্তম পন্থা। এখনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
এস.এস.সি.
পাশ
এবং
মাধ্যমিক
বিদ্যালয়ে
ও
কলেজে
তৃতীয়
বিভাগ/শ্রেণীর
শিক্ষক
নিয়োগের
সুযোগ
রয়েছে। মোট
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
৯০---
ভাগ
বেসরকারি
প্রতিষ্ঠানে
শিক্ষক
নিয়োগের
ক্ষমতা
রয়েছে
আগের
মতই
দলীয়
ম্যানেজিং
কমিটি
ও
গভর্নিং
বডির
হাতে। “বর্তমান
সরকার
ক্ষমতাসীন
হইবার
পরপরই
গত
বছর
বেসরকারি
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান
ব্যবস্থাপনা
ও
পরিচালনার
ক্ষেত্রে
উচ্চ
মাধ্যমিক
স্তরের
জন্য
গভর্নিং
বডি
মাধ্যমিক
স্তরের
জন্য
ম্যনেজিং
কমিটি
গঠনের
নতুন
নীতিমালা
ঘোষিত
হইয়াছে। নতুন
নীতিমালা
হওয়ার
পরও
সংবাদপত্রে
দেশের
বহু
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
দলীয়
লোকজন
ঢোকানোর
অভিযোগ
উঠিয়াছে। একইরকম
অভিযোগ
দেখিতে
পাওয়াযায়
দেশের
উচ্চ
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানে
শিক্ষক
নিয়োগের
ক্ষেত্রেও।”
[সম্পাদকীয়,
দৈনিক
ইত্তেফাক,
২৪
সেপ্টেম্বর
২০১০।] সারা
দেশে
ব্যক্তিগত
ভাবে
প্রতিষ্ঠিত
ও
বণিজ্যিক
ভাবে
পরিচালিত
হাজার
হাজার
কোচিং
সেন্টার
বন্ধ
করার
আগে
অবশ্যই
নিশ্চিত
করতে
হবে
শ্রেণীকক্ষে
পরিপূর্ণ
পাঠ
দান। সর্বাগ্রে
শিশ্চিত
করতে
হবে
শিক্ষার্থীদের
প্রদত্ত
টিউশন-ফির
বিনিময়ে
প্রাপ্য
ক্লাস। দেশের
রোগিদের
মত
শিক্ষার্থীরাও
বাধ্য
হয়েই
এখন
নির্ভরশীল
প্রাইভেট
ব্যবস্থার
উপর। এমনকি
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের
ভিতরেও
কোচিং
এর
নামে
দীর্ঘ
দিন
ধরে
চলছে
অতিরিক্ত
টাকা
নিয়ে
প্রাইভেট
পড়ানো। দেখেও
না
দেখার
ভান
করেছে
বিগত
সরকারগুলো। প্রতিকার
পাওয়ার
আশা
ছিল
না
বলেই
মুখ
খুলেন
নি
অভিভবকগণ। প্রতিকারের
আশায়
বুক
বেঁধে
মুখ
খুলেছেন
এখন। সেইসাসে
মুখ
খুলেছেন
খুঁদ
প্রধানমন্ত্রীসহ
সবাই। এ ব্যাপারে
গত
০৮
আগস্ট
২০১০
তারিখে
মহাপরিচালকের
সঙ্গে
শিক্ষকদের
বৈঠকে
খোঁজার
চেষ্টা
করা
হয়
এর
প্রতিকার
বা
ফায়সালা। প্রতিষ্ঠান
প্রধানগণ
বলছেন-
‘... প্রচলিত
প্রথা
অনুসারে
পাবলিক
পরীক্ষার
আগে
সব
বিদ্যালয়
কোচিং
করিয়ে
থাকে। কোচিং
ক্লাস
ও
প্রস্তুতিমূলক
পরীক্ষা
নেওয়ার
বিষয়ে
সরকারের
কোন
নীতিমালা
থাকার
কথা
জানা
নেই।
... বিদ্যালয়ে
কোচিং
বন্ধ
করতে
হলে
এর
বিকল্প
ঠিক
করতে
হবে।
... প্রাইভেট
পড়ার
বিকল্প
হিসেবে
বিদ্যালয়ে
শিক্ষার্থীদের
কোচিং
করানো
হচ্ছে। এত শিক্ষার্থীদের
টাকাও
কম
খরচ
হচ্ছে,
শিক্ষকেরা
তাদের
যতœ
নিতে
পারছেন।
...’ এ
ব্যাপারে
মাননীয়
শিক্ষামন্ত্রী
নূরুল
ইসলাম
নাহিদ
সুস্পষ্ট
বলেছেন-
‘পিছিয়ে
পড়া
ছাত্রছাত্রী
বা
বিশেষ
পরীক্ষা
সামনে
রেখে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
বাড়তি
ক্লাস
নেওয়াকে
মন্ত্রণালয়
উৎসাহিত
করে। তবে
এ
বিষয়টির
সঙ্গে
টাকা-পয়সার
সম্পর্ক
থাকা
উচিৎ
নয়।’ তথাপি
শিক্ষকগণ
বার
বারই
অধিকারের
স্বরে
প্রশ্ন
করছেন,
বাড়তি
টাকা
না
পেলে
তারা
বাড়তি
মেধা
ও
শ্রম
দেবেন
কেন?
[সূত্র-
দৈনিক
প্রথম
আলো,
০৯
আগস্ট
২০১০।]
অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ মাননীয়
শিক্ষামন্ত্রীর
মতামত। কারণ
পি.এস.সি.,
জে.এস.সি.,
ও
এইচ.এস.সি.
প্রতিটি
সরকারি
পরীক্ষাই
অনুষ্ঠিত
হয়
নির্ধারিত
সেসন
চলাকালে। শিক্ষার্থীরা
টাকা
দিয়েও
বঞ্চিত
হয়
প্রাপ্য
ক্লাস
থেকে। যেমন:
পঞ্চম
ও
অষ্টম
শ্রেণীর
শিক্ষার্থীদের
নিকট
থেকে
ডিসেম্বর
মাস
পর্যন্ত
টিউশন-ফি আদায়
করা
হয়;
অথচ
তাদের
পরীক্ষা
হয়
নভেম্বর
মাসে। দ্বাদশ
শ্রেণীর
শিক্ষার্থীদের
নিকট
থেকে
জুলাই
মাস
পর্যন্ত
টিউশন-ফি আদায়
করা
হয়;
অথচ
তাদের
পরীক্ষা
হয়
এপ্রিল/মে সাসে। এস.এস.সি.
পরীক্ষা
সেসনের
পরে ফেব্র“য়ারি/মার্চে অনুষ্ঠিত হয় বিধায়
তাদের
নিকট
থেকে
পুরো
মার্চ
মাস
পর্যন্ত
(সেসনের
অতিরিক্ত
তিন
মাস)
টিউশন-ফি আদায়
করা
হয়। এসকল
শিক্ষার্থীদেরই
চূড়ান্ত
পরীক্ষায়
ডিউটি
করে
ও
খাতা
দেখে
আবারো
শিক্ষকগণ
নিচ্ছেন
টাকা। রোজাসহ
বিভিন্ন
বড়/ছোট
ছুটির
সময়
গুলোতেওতো
মওকুফ
করা
হয়না
শিক্ষর্থীদের
টিউশন-ফি। অন্যান্য
সরকারি-
বেসরকারি
প্রতিষ্ঠানের
চেয়ে
শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের
এসব
অতিরিক্ত
ছুটিতো
শিক্ষার্থীদের
জন্য,
শিক্ষকদের
জন্য
নয়। কেচিং
করানোর
নামে
বাড়তি
টাকা
নিয়ে
প্রাইভেট
পড়ানোর
জন্য
তো
নয়ই। এর পরও
শিক্ষকগণ
কোন্
মুখে
বলছেন,
বাড়তি
টাকা
না
পেলে
তারা
বাড়তি
মেধা
ও
শ্রম
দেবেন
না। আর কত বাড়তি
চান
তারা?
সন্তানতোল্য
শিক্ষার্থীদের
সাথে
কিসের
এত
হিসাব?
কেণ
এত
অনৈতিক
বাণিজ্য?
দুই-তিন
মাসের
টিউশন-ফি এর বিনিময়েও
কি
তারা
পেতে
পারে
না
চূড়ান্ত
পরীক্ষার
আগ
পর্যন্ত
এক-দেড়
মাসের
বিশেষ
ক্লাস,
বিশেষ
যতœ?
তারা
কি
টাকা
(টিউশন-ফি)
দেয়নি
বছরের
পর
বছর
নিচের
ক্লাসে
পড়ার
সময়?
শুধু
কি
শিক্ষার্থীরাই
রৃণী
থাকে,
কোন
দায়বদ্ধতা
থাকে
না
শিক্ষকের?
এমতাবস্থায়
কঠোর
সরকারি
সিদ্ধান্ত
দিয়ে
বাস্তবায়ন
করতে
হবে
শিক্ষামন্ত্রী
মহোদয়ের
যুক্তিযুক্ত
মতামত। এসব
নীতি-বিবেগ
বর্জিত
শিক্ষকদের
পরামর্শ্বে
তৈরি
কারা
উচিৎ
হবে
না
কাচিং-
ফির
নামে
শিক্ষার্থীদের
নিকট
থেকে টাকা আদায়ের কোন দুর্নীতিমালা।
[লেখক- শিক্ষাবিদ।
E-mail:md.rahamotullah52@gmail.com]
No comments:
Post a Comment