মঙ্গলবার, জুন, ১৮, ২০১৩: ০৮ বছর, সংখ্যা ১৩
মো. রহমত উল্লাহ্
বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রসারে দানশীল মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি। কোনো সরকারই কওমি মাদ্রাসারভবন তৈরি এবং এর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কোনো আর্থিক অনুদান প্রদান করেনি, যেমনটি করেছেআলিয়া মাদ্রাসার ক্ষেত্রে।
হয়তো সব সরকারই এমন ধারণা পোষণ করেছে ও করছে যে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতরাযেহেতু জাতীয় উৎপাদনে ভূমিকা রাখার কোনো যোগ্যতা লাভ করে না এবং দেশের জিডিপিতে যেহেতু তাদের তেমনকোনো ভূমিকা নেই সেহেতু কর্মমুখী জনগণের ট্যাক্সের টাকায় গঠিত সরকারি কোষাগার থেকে তাদের পেছনে অর্থ ব্যয়করা অনুচিত। এ কথা মিথ্যা নয় যে কওমি মাদ্রাসায় প্রচলিত শিক্ষায় শেখানো হয় না কোনো আধুনিক কর্মকৌশল। মুখস্থকরানো হয় কেবল কোরআন ও হাদিস। এর পাশাপাশি সেখানে শেখানো হয় না আধুনিক কৃষি কাজ,হাঁস-মুরগি-গরু-ছাগল লালন-পালন, মাছ চাষের নিয়মকানুন, জামা-কাপড় সেলাই কৌশল, ছোট-বড় কোনো ফ্যাক্টরিরকাজ, দালানকোঠা নির্মাণ কাজ, কম্পিউটার পরিচালনা, মানুষের প্রয়োজনীয় কোনো পণ্যের উৎপাদন ও উদ্ভাবন,আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজি, এমনকি সঠিকভাবে শেখানো হয় না মাতৃভাষা বাংলাও। তদুপরি বড় কিতাবগুলো উর্দুতেপড়ানোর এবং বাংলা ভালো না জানার কারণে করতে পারে না আরবির উত্তম অনুবাদ, যা সাধারণের বোধগম্য হবেসহজেই। সেই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে তারা জানতে পারে না বর্তমান বিশ্বসমাজে টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য রাজনীতি,অর্থনীতি, খনিবিজ্ঞান, তড়িৎবিজ্ঞান, তরঙ্গবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, কম্পিউটারবিজ্ঞান,পরিবেশবিজ্ঞান, পুষ্টিবিজ্ঞান ইত্যাদি। তাই তারা অনেক ক্ষেত্রে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয় পবিত্র কোরআন এবং আধুনিকবিজ্ঞানকে। মহান সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর বাইরে ও ভেতরে যে অফুরন্ত সম্পদ রেখে দিয়েছেন মানুষের কল্যাণে এবং সেসবেরতথ্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বলে দিয়েছেন পবিত্র কোরআনে, তা তারা করতে পারে না আমাদের ব্যবহার উপযোগী।ব্যবহার করাও অনুচিত মনে করে অনেক সময়। তারা দার্শনিক ও বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে সব ক্ষেত্রে প্রমাণ করার যোগ্যতালাভ করে না যে সব আধুনিক নিয়মনীতি ও জ্ঞানবিজ্ঞানের উৎস হচ্ছে পবিত্র কোরআন। তদুপরি তারা মেনে নিতে চায় নাকওমি মাদ্রাসার হুজুর ছাড়া অন্য কারো ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজে পিএইচডিডিগ্রি লাভকারীদের মতামতের চেয়েও অনেক সময় উত্তম মনে করে তাদের হুজুরদের মতামত। তাদের অনেকে আবারপৃথক করে দেখেন ধর্ম এবং কর্মকে। মানুষের কল্যাণে কোনো কিছু উৎপাদন এবং উদ্ভাবনের মতো পুণ্যকর্মগুলোসম্পাদনের দায়িত্ব যেন তাদের নয়; দায়িত্ব কেবল স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের। বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা প্রসারে দানশীল মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি। কোনো সরকারই কওমি মাদ্রাসারভবন তৈরি এবং এর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কোনো আর্থিক অনুদান প্রদান করেনি, যেমনটি করেছেআলিয়া মাদ্রাসার ক্ষেত্রে।
এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থায় বেড়ে ওঠা মানুষ সঙ্গত কারণেই হয়ে ওঠে কর্মবিমুখ। ছোটবেলা থেকে তারা কখনো ভাবতেপারে না যে পড়ালেখা শেষ করে তাদের হতে হবে কোনো পণ্য বা সেবা উৎপাদনের উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীপ্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। যাদের দানের টাকায় চলে তাদের এই কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাজীবন, তারাও ভাবেন না এমনটি।এসব মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, আর্থিক সহায়তাকারী এবং সাধারণ মানুষ সবাই মনে করেন মাদ্রাসায় পড়েহুজুর হবে, কাজ করবে কেন? একটা বাস্তব উদাহরণ দিই। আমার একজন আত্মীয় বিএ পাস করে নামমাত্র পুঁজি নিয়ে শুরুকরে তৈরি পোশাকের ব্যবসা। সে এখন অনেক ধনী। অনেক রকম ব্যবসা তার। যেমন ধর্মকর্মে সক্রিয় তেমন উদার তারদানের হাত। তার দানের টাকায় চলে একাধিক আবাসিক কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উন্নতজীবনযাপন। তাকে বলেছিলাম, 'তোমার তো বিদেশে পণ্য রপ্তানির প্রয়োজনে অনেক কার্টন, পলিব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসকিনতে হয়। এসব বা অন্য কোনো লাভজনক পণ্য উৎপাদনের জন্য মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর পাশে পড়ে থাকা খালিজায়গায় ছোট ছোট কারখানা তৈরি কর। তাতে এই শত শত শিক্ষার্থী পড়ার অবসরে দিনে দু-এক ঘণ্টা করে কাজ শিখতেও করতে পারবে। এ কাজের একটা পারিশ্রমিক দাও। তা থেকে তার খরচ চালাতে বল। ঘাটতিটা তুমি দান কর, যাতেতারা পড়ার পাশাপাশি কাজের দক্ষতা লাভ করবে এবং অপরের দানের হাতের দিকে তাকিয়ে না থেকে আত্মনির্ভরশীলহতে শিখবে।' হয়তো বা বেয়াদবি হবে মনে করে সে আমার এ প্রস্তাবের উত্তরে মুখ খুলে কিছুই বলল না। কিন্তু বাস্তবেপ্রত্যাখ্যান করল আমার দেয়া কয়েক বছর আগের সেই প্রস্তাব। বোধ করি এরূপ কাজে সম্মত হলেন না মাদ্রাসার শিক্ষকবা হুজুররা।
উৎপাদনমুখী কাজকর্মের শারীরিক ও মানসিক অযোগ্যতা নিয়ে এসব মাদ্রাসা থেকে পাস করে এসে দান গ্রহণের জন্যহাত বাড়ানো ছাড়া আর কী করবে এই শিক্ষিতরা? তাই তো তাদের অধিকাংশরা ওস্তাদদের মতোই তৈরি করে আরোএকটি কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানা। নিজেরা হয়ে যান হুজুর। এতিম শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দেন দান-খয়রাত আহরণে।হয়তো নিজের শিক্ষাজীবনে এমনটি করেছিলেন তিনিও। অতি সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের বাড়ি থেকে চাল তুলে চলেঅধিকাংশ গ্রামের কওমি মাদ্রাসার সেই হুজুরদের খোরাক। কোরবানির পশুর চামড়ার টাকা, জাকাতের টাকা, ফিতরারটাকায় চলে অধিকাংশ এতিমখানার লিল্লাহ বোর্ডিং। মসজিদের দানবাক্সের টাকায় চলে অধিকাংশ ইমাম, মুয়াজ্জিন ওখাদেমের বেতন। সাধারণত বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে প্রদান করা হয় তাদের খাবার। এতিমদের লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের খাবারওখেয়ে থাকে তাদের দেখভালে নিয়োজিত অনেকেই। ইদানীং অবশ্য শহর ও উপশহরে গড়ে ওঠা কিছু কওমি মাদ্রাসায়পড়াশোনা করছে মধ্যবিত্ত পরিবারের দু-একটি সন্তান। যারা পরিশোধ করছে বেতন ও খাওয়া-থাকার সামান্য খরচ। তারপরেও দেশের প্রায় সব কওমি মাদ্রাসার উন্নয়ন এবং হুজুরদের বেতন-ভাতার পরিমাণ নির্ভর করছে দেশ-বিদেশেঅবস্থানরত ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের দান-খয়রাতের টাকার ওপর। দেশে-বিদেশে বসবাসকারী যেসব মানুষের কষ্টার্জিত টাকাদিয়ে চলছে প্রায় সব কটি এতিমখানা, কওমি মাদ্রাসা ও মসজিদের অধিকাংশ খরচ; তারা কিন্তু এরূপ কওমি মাদ্রাসারশিক্ষাগত যোগ্যতার দ্বারা অর্জন করেননি এমন পরিমাণ অর্থ উপার্জনের কর্মক্ষমতা, যা দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েকরতে পারেন দান-খয়রাত। আমার উলি্লখিত ধনী দানশীল আত্মীয় কিন্তু বিএ পাস। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় যারাকাজ করেন তারা সবাই টেকনিক্যাল বা জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত। অনেক টাকা বেতনের বড় বস এমবিএ পাস। লক্ষণীয়ব্যাপার হলো, আমরা আমাদের দান-খয়রাতের টাকায় পরিচালিত কওমি মাদ্রাসায় লাখ লাখ সন্তানকে দিচ্ছি এমনই উত্তমশিক্ষাগত যোগ্যতা যা নিয়ে তারা কাজ পায় না আমাদের প্রতিষ্ঠানেই! আমি জানি না অধিক সওয়াবের আশায় দান-খয়রাতকরে কওমি মাদ্রাসায় পড়িয়ে সুস্থ-সবল অবুঝ শিশুগুলোকে আমরা যারা করে দিচ্ছি কর্ম অক্ষম বা অদক্ষ তার কী পুরস্কারআল্লাহ আমাদের দেবেন। আমাদের নবিজি (সা.) তো হাত পাততে বলেননি, কাজ করে খেতে বলেছেন। কাজ করতে হলেতো ধর্মীয় জ্ঞানলাভের পাশাপাশি কোনো না কোনো কাজের যোগ্যতা লাভ করতেই হবে। একটা দেশের সবাই যদি এরূপ কওমি মাদ্রাসায় পড়া এবং পড়ানোর কাজ করে তো হুজুরদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারপাব কোথায়? ওষুধ বানাবে কে? সুন্দর সুন্দর মসজিদ, মাদ্রাসা ও বাড়িঘর বানানোর ইঞ্জিনিয়ার পাব কোথায়? কে বানাবেফ্যান, ফ্রিজ, এসি, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন? ফ্যানের বাতাস আর এসির ঠা-া খাওয়ার জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানাবে বাচালাবে কারা? ওয়াজ করার জন্য মাইক বানাবে কে? চাষাবাদ করার লোক আসবে কোথা থেকে? কে উদ্ভাবন করবেঅধিক ফসল উৎপাদনের কৌশল? কারা আবিষ্কার করবে কাপড় তৈরির সুতা? কারা তৈরি করবে শরীর ও পোশাকপাক-সাফ করার সাবান? কে আবিষ্কার করবে মাটির ঢিলার বিকল্প টয়লেট পেপার? কে উদ্ভাবন ও ব্যবহার উপযোগীকরবে আল্লাহতায়ালার দেয়া খনিজ সম্পদ, পানিসম্পদ, বায়ুসম্পদ, বেতার তরঙ্গ আর সৌরশক্তি? কারা তৈরি ও পরিচালনাকরবে দ্রুতগামী যানবাহন? কারা করবে এরূপ দান-খয়রাত?সুস্থ-সবল সবাই কর্মক্ষম হলে, কর্মে নিয়োজিত হলে নিশ্চয়ই বৃদ্ধি পাবে দেশের সচ্ছলতা ও অগ্রগতি এবং হ্রাস পাবেপরনির্ভরতা ও পরাধীনতা। আত্মনির্ভরশীলতার অভাবই আমাদের অনৈক্য ও অশান্তির প্রধান কারণ। তাই নৈতিক ও ধর্মীয়শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী ও বিজ্ঞানমনস্ক করা জরুরি দেশের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থা।
উৎপাদনমুখী কাজকর্মের শারীরিক ও মানসিক অযোগ্যতা নিয়ে এসব মাদ্রাসা থেকে পাস করে এসে দান গ্রহণের জন্যহাত বাড়ানো ছাড়া আর কী করবে এই শিক্ষিতরা? তাই তো তাদের অধিকাংশরা ওস্তাদদের মতোই তৈরি করে আরোএকটি কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানা। নিজেরা হয়ে যান হুজুর। এতিম শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দেন দান-খয়রাত আহরণে।হয়তো নিজের শিক্ষাজীবনে এমনটি করেছিলেন তিনিও। অতি সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের বাড়ি থেকে চাল তুলে চলেঅধিকাংশ গ্রামের কওমি মাদ্রাসার সেই হুজুরদের খোরাক। কোরবানির পশুর চামড়ার টাকা, জাকাতের টাকা, ফিতরারটাকায় চলে অধিকাংশ এতিমখানার লিল্লাহ বোর্ডিং। মসজিদের দানবাক্সের টাকায় চলে অধিকাংশ ইমাম, মুয়াজ্জিন ওখাদেমের বেতন। সাধারণত বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে প্রদান করা হয় তাদের খাবার। এতিমদের লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের খাবারওখেয়ে থাকে তাদের দেখভালে নিয়োজিত অনেকেই। ইদানীং অবশ্য শহর ও উপশহরে গড়ে ওঠা কিছু কওমি মাদ্রাসায়পড়াশোনা করছে মধ্যবিত্ত পরিবারের দু-একটি সন্তান। যারা পরিশোধ করছে বেতন ও খাওয়া-থাকার সামান্য খরচ। তারপরেও দেশের প্রায় সব কওমি মাদ্রাসার উন্নয়ন এবং হুজুরদের বেতন-ভাতার পরিমাণ নির্ভর করছে দেশ-বিদেশেঅবস্থানরত ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিদের দান-খয়রাতের টাকার ওপর। দেশে-বিদেশে বসবাসকারী যেসব মানুষের কষ্টার্জিত টাকাদিয়ে চলছে প্রায় সব কটি এতিমখানা, কওমি মাদ্রাসা ও মসজিদের অধিকাংশ খরচ; তারা কিন্তু এরূপ কওমি মাদ্রাসারশিক্ষাগত যোগ্যতার দ্বারা অর্জন করেননি এমন পরিমাণ অর্থ উপার্জনের কর্মক্ষমতা, যা দিয়ে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েকরতে পারেন দান-খয়রাত। আমার উলি্লখিত ধনী দানশীল আত্মীয় কিন্তু বিএ পাস। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় যারাকাজ করেন তারা সবাই টেকনিক্যাল বা জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত। অনেক টাকা বেতনের বড় বস এমবিএ পাস। লক্ষণীয়ব্যাপার হলো, আমরা আমাদের দান-খয়রাতের টাকায় পরিচালিত কওমি মাদ্রাসায় লাখ লাখ সন্তানকে দিচ্ছি এমনই উত্তমশিক্ষাগত যোগ্যতা যা নিয়ে তারা কাজ পায় না আমাদের প্রতিষ্ঠানেই! আমি জানি না অধিক সওয়াবের আশায় দান-খয়রাতকরে কওমি মাদ্রাসায় পড়িয়ে সুস্থ-সবল অবুঝ শিশুগুলোকে আমরা যারা করে দিচ্ছি কর্ম অক্ষম বা অদক্ষ তার কী পুরস্কারআল্লাহ আমাদের দেবেন। আমাদের নবিজি (সা.) তো হাত পাততে বলেননি, কাজ করে খেতে বলেছেন। কাজ করতে হলেতো ধর্মীয় জ্ঞানলাভের পাশাপাশি কোনো না কোনো কাজের যোগ্যতা লাভ করতেই হবে। একটা দেশের সবাই যদি এরূপ কওমি মাদ্রাসায় পড়া এবং পড়ানোর কাজ করে তো হুজুরদের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারপাব কোথায়? ওষুধ বানাবে কে? সুন্দর সুন্দর মসজিদ, মাদ্রাসা ও বাড়িঘর বানানোর ইঞ্জিনিয়ার পাব কোথায়? কে বানাবেফ্যান, ফ্রিজ, এসি, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন? ফ্যানের বাতাস আর এসির ঠা-া খাওয়ার জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানাবে বাচালাবে কারা? ওয়াজ করার জন্য মাইক বানাবে কে? চাষাবাদ করার লোক আসবে কোথা থেকে? কে উদ্ভাবন করবেঅধিক ফসল উৎপাদনের কৌশল? কারা আবিষ্কার করবে কাপড় তৈরির সুতা? কারা তৈরি করবে শরীর ও পোশাকপাক-সাফ করার সাবান? কে আবিষ্কার করবে মাটির ঢিলার বিকল্প টয়লেট পেপার? কে উদ্ভাবন ও ব্যবহার উপযোগীকরবে আল্লাহতায়ালার দেয়া খনিজ সম্পদ, পানিসম্পদ, বায়ুসম্পদ, বেতার তরঙ্গ আর সৌরশক্তি? কারা তৈরি ও পরিচালনাকরবে দ্রুতগামী যানবাহন? কারা করবে এরূপ দান-খয়রাত?সুস্থ-সবল সবাই কর্মক্ষম হলে, কর্মে নিয়োজিত হলে নিশ্চয়ই বৃদ্ধি পাবে দেশের সচ্ছলতা ও অগ্রগতি এবং হ্রাস পাবেপরনির্ভরতা ও পরাধীনতা। আত্মনির্ভরশীলতার অভাবই আমাদের অনৈক্য ও অশান্তির প্রধান কারণ। তাই নৈতিক ও ধর্মীয়শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী ও বিজ্ঞানমনস্ক করা জরুরি দেশের কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থা।
মো. রহমত উল্লাহ্: অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা
Email: mdrahamotullah52@gmail.com
Email: mdrahamotullah52@gmail.com
No comments:
Post a Comment