Thursday, August 1, 2013

শিক্ষাক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে অব্যাহত অগ্রগতি


০২ জানুয়ারি ২০১১
উপ-সম্পাদকীয়> দৃষ্টিকোণ
শিক্ষাক্ষেত্রে নিশ্চিত করতে হবে অব্যাহত অগ্রগতি
মো. রহমত উল্লাহ্
বর্তমান সরকারের গত সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ছিল সর্বাধিক সক্রিয় আলোচিত শিক্ষা ক্ষেত্রে সূচিত হয়েছে অনেক অগ্রগতি আধুনিক যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা, মাদ্রাসা শিক্ষাকে কর্মক্ষম নাগরিক তৈরির উপযোগি করা, কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের ব্যবস্থা করা, অন-লাইনে ভর্তি রেজিস্ট্রেসন কার্যক্রম চালু করা, লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করা, সরকারি স্কুলগুলোতে ডবল সিফট চালু করাশিক্ষাবর্ষের শুরুর দিন থেকে ক্লাস শুরু করা, সঠিক সময়ে বিনা মূল্যে বই বিতরণ করা, মানসম্পন্ন সহপাঠ বই নির্দিষ্ট করে দেওয়া,
পাঠ্য বইয়ে দেশ জাতির সঠিক ইতিহাস সংযোজন করা, জাতীয়দিবসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলা রেখে তাৎপর্যপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎযাপন করা, দেশের সকল প্রতিষ্ঠানে একই রুটিনে অভ্যন্তরীন/ সাময়ীক পরীক্ষাগুলো গ্রহণ করে ফলাফল প্রকাশ করা, সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতির প্রবর্তন করা, নোট-গাইড মুখস্ত/নকল করার পরিবর্তে মূল বই ভিত্তিক মেধা চর্চা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা, প্রাইভেট টিউশনি কোচিং নির্ভর শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করা, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা প্রবর্তন করে বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি করা, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা প্রবর্তন করা, স্বল্প সময়ে বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করে অন-লাইনে প্রকাশ করা, মোবাইল ফোনে এস.এম.এস. এর মাধ্যমে বোর্ড পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়ণের ব্যবস্থা করা, ভালো স্কুল/ কলেজ বাছাই পদ্ধতি অধিকতর যুক্তিযুক্ত করা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে ১১টি করে কম্পিউটার সরবরাহ করা, আধুনিক পদ্ধতিতে পাঠদানের সুবিধার্থে বিনা মূল্যে লেপটপসহ প্রজেক্টার প্রদানের কর্মসূচি গ্রহণ করা, প্রায় দুই হাজার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এম.পি..ভুক্ত করা, তিন শতাধিক দাখিল আলিম মাদ্রসাকে পাঠদানের অনুমতিসহ একাডেমিক  স্বীকৃতি প্রদান করা, দেড় শতাধিক মাদ্রাসায় ভোকেশনাল অনার্স কোর্স চালু করা, ত্রিশ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা, সরকারি কলেজে নতুন পদ সৃষ্টি করে শিক্ষকদের প্রাপ্য পদোন্নতি প্রদান করা, বেসরকারি শিক্ষকদের টাইম-স্কেল প্রদান করা, বিপুল সংখ্যক মাধ্যমিক  শিক্ষকসহ প্রায় ৩২ হাজার সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা, তিন সহস্রাধিক স্কুল-কলেজের একাডেমিক ভবন ণির্মমান প্রকল্প গ্রহণ করা, সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় আরো দেড় হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনসহ শতভাগ উপবৃত্তি খাদ্য সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা, উচ্চ শিক্ষার মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ প্রণয়ন করা, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া, প্রতি বিভাগে একটি করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র স্থানের পদক্ষেপ নেওয়া, তিনটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা এবং আরো ছয়টি স্থাপনের কার্যক্রম হাতে নেওয়াশিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সমূহ থেকে দুর্নীতি দূর করে সচ্ছতা জবাবদিহিতা আনয়নের চেষ্টা করা ইত্যাদি কার্যক্রমের ফলে দীর্ঘ দিন পর আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে সূচিত হয়েছে লক্ষণীয় অনুকুল পরিবর্তনের আবহ এর জন্য আমাদেরকে আন্দোলন, সংগ্রম অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক মূলত আধুনিক বিজ্ঞানমনষ্ক যোগোপযোগী উৎপাদনসহায়ক একমুখি জাতীয় চেতনাসমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক  সতাদর্শপূর্ণ একটি শিক্ষানীতির অভাবেই সর্বক্ষেত্রে চরম ভাবে ব্যহত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত অগ্রগতি বিনষ্ট হয়েছে বাঙালি জাতির সেই বজ্র কঠিন ঐক তৈরি হয়নি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সোনার মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে পরাজিত শক্তির আস্ফালন পরিপূর্ণ সফলতা পায়নি আমাদের রক্তে কেনা স্বাধীনতা আজো অনেক সাধারন মানুষ অনুধাবন করতে পারছে না অথবা আমরা তাঁদেরকে অনুধাবন করাতে পারছি না এই বাস্তব সত্য অথচ আমাদের এই অধগতির পিছনে বিরামহীন কাজ করেছে যাদের কালো হাত, তারা বোঝে ঠিকই তারা জানে শিক্ষাক্ষেত্রে সূচিত আজকের এই অনুকূল পরিবর্তনের ধারা  অব্যাহত থাকলে, আরো বেগবান হলে নিশ্চিত হবে দেশের অগ্রগতি, শানিত হবে জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি পাবে সুশিক্ষিত সচ্ছল মানুষ দ্রুত  হ্্রাস পাবে তাদের অপরাজনীতির ক্রীড়নক হতদরিদ্র সুশিক্ষার আলো বঞ্চিত দূরদৃষ্টিহীন মানুষের সংখ্যা সেই সাথে হ্্রাস পাবে তাদের ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা তাই তারা প্রকাশ্যে এবং গোপনে বিরোধিতা করছে এই আধুনিক বিজ্ঞানমনষ্ক যোগোপযোগী উৎপাদনসহায়ক একমুখি জাতীয় চেতনাসমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক  সতাদর্শপূর্ণ শিক্ষানীতির তৈরি করছে এই নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ছোট বড় প্রতিবন্ধকতা যে কোন মূল্য দিতেও কিšÍ তারা প্রস্তুত মনে রাখতে হবে, শুধু মাঠে নয়, সরকারি পদক্ষেপ বাস্তায়ন যন্ত্র তথা প্রশাসন যন্ত্রের বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রশানের সর্বস্তরে রয়েছে তাদের কম বেশি অবস্থান সেইসাথে রয়েছে  সুবিধাবাদি দুর্নীতিপরায়ণ অযোগ্য লোক ঘাপটি মেরে থাকা এই দুষ্ট চক্র একটু সুযোগ পেলেই লন্ড ভন্ড করে দিবে সব সফলতা শুভ  আয়োজন শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে হরতাল আহ্বান এবং ২০০৯ সালে এন.সি.টি.বি.’ বইয়ের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড এর জলন্ত উদাহরণ সরকারি চিঠি-পত্র প্রজ্ঞাপন  সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না পৌঁছানো বা বাস্তবায়ন যোগ্য সময়ের পরে পৌঁছানোর উদাহরণ তো আছেই তাই ক্ষেত্রে সতর্কতা, একতা দৃঢ়তা একান্ত আবশ্যক অবশ্যই দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রশাসনের প্রতিটি স্তর সর্বত্র যুক্ত করতে হবে সৎ, যোগ্য, কর্মঠ দেশ প্রেমিক শিক্ষক এবং কর্তা-কর্মী শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে দ্রুত কার্যকর করতে হবে ডিজিটাল ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে সচ্ছতা জবাবদিহিতা নির্ধারন করে দিতে হবে সকল স্তরে নিয়োজিত শিক্ষকগণের কর্মঘন্টা সেইসাথে বৃদ্ধি করতে হবে শিক্ষকগণের আর্থিক সচ্ছলতা কেননা  দেশ জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই শিক্ষানীতির সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে শিক্ষকগণের শতষ্ফুর্ত সহযোগিতা //    [ লেখক- কলেজ অধ্যক্ষ


No comments:

Post a Comment