ঢাকা,
মঙ্গলবার, ২৯
জানুয়ারি ২০১৩,
১৬
মাঘ
১৪১৯,
১৬
রবিউল
আওয়াল
১৪৩৪
শিক্ষা
অপার
সম্ভাবনার স্কুল
ব্যাংকিং
মো.
রহমত
উল্লাহ্
অগ্রগতির নিয়ামকসমূহের মধ্যে
সঞ্চয়
অত্যন্ত গুরুত্ববহ। যাদের
সঞ্চয়
প্রবণতা যত
বেশি
তাদের
অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবার
বাস্তব
সম্ভাবনাও তত
বেশি।
ছোটবেলা থেকে
এই
বিশেষ
গুণটি
কোন
মানুষের মনের
মধ্যে
প্রোথিত হলে
সারাজীবনই এর
সুফল
লাভ
করা
যায়।
আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে একটি সার্কুলার জারি করে যে, স্কুলের শিক্ষার্থীরা নিজ নামে ব্যাংকে একাউন্ট ওপেন করতে পারবে। এই সার্কুলার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুসারে স্কুল ব্যাংকিং বা স্টুডেন্ট ব্যাংকিং-এর আওতায় 'ইয়ং স্টার' 'ফিউচার স্টার'... ইত্যাদি উদ্দীপনাসূচক নামে ব্যাংকগুলো চালু করে আকর্ষণীয় স্কিম। অত্যন্ত সহজ শর্তে ওপেন করা শুরু হয় শিক্ষার্থীদের নিজের নামে ব্যাংক একাউন্ট।
এই
স্কিমের আওতায়
যে
কোন
শিক্ষার্থী এক
কপি
ছবি,
স্কুলের আইডি
কার্ড
ও
নামমাত্র টাকা
দিয়ে
যে
কোন
ব্যাংকের যে
কোন
শাখায়
ওপেন
করতে
পারে
সেভিংস
ব্যাংক
একাউন্ট বা
সঞ্চয়ী
হিসাব।
যে
কোন
অপ্রাপ্ত বয়সের
শিক্ষার্থী মাত্র
৫/১০ টাকা জমা
দিয়ে
শুরু
করতে
পারে
তার
সঞ্চয়ী
হিসাব।
এই
হিসাবে
টাকা
জমা
করা
না
করার
কোন
বাধ্য-বাধকতা নেই। সপ্তাহের/মাসের/বছরের যে কোন
এক
বা
একাধিক
দিন
তার
হিসাবে
জমা
করতে
পারে
যে
কোন
পরিমাণ
টাকা।
এই
হিসাব
পরিচালনার জন্য
কোনরূপ চার্জ
নেয়
না
ব্যাংক। জমাকৃত
টাকার
উপর
শিক্ষার্থীরা পেয়ে
থাকে
সর্বাধিক হারে
মুনাফা
বা
ইন্টারেস্ট। তদুপরি,
ব্যাংকভেদে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বা
নামমাত্র মূল্যে
পেয়ে
থাকে
জমাবই,
চেকবই,
ডেবিটকার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং ইত্যাদি সুবিধা। এই
হিসাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বয়ংক্রীয়ভাবে পরিশোধ করতে
পারে
তাদের
স্কুল-কলেজের বেতন-ফি।
এছাড়াও
সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য
প্রয়োজনে ব্যাংক
থেকে
সহজশর্তে নিতে
পারে
শিক্ষাঋণ। আজকের
একটি
ছোট্ট
ছেলে
বা
মেয়ে
তার
স্কুলের টিফিনের টাকা,
ঈদ/পূজা, জন্মদিন বা
অন্যকোন শুভদিনে প্রাপ্ত উপহারের টাকার
কিছু
অংশ
নিয়মিত
সঞ্চয়
করতে
থাকলে
১৫/২০/২৫ বছরের
শিক্ষা
জীবন
শেষে
যেয়ে
মোট
জমাকৃত
টাকা
এবং
এর
লাভসহ
হাতে
পাবে
একটা
মোটা
অংকের
টাকা;
যা
দিয়ে
সে
শুরু
করতে
পারবে
ব্যক্তিগত ও
জাতীয়
উন্নয়নের জন্য
আত্মকর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা। নির্বাহ করতে
পারবে
নিজের
বিয়ের
বা
সংসারের প্রাথমিক ব্যয়।
কেননা
ছোটবেলা থেকেই
ব্যাংকে সঞ্চয়ী
হিসাব
পরিচালনার মাধ্যমে সে
প্র্যাকটিক্যালি শিখে
যাবে
সঞ্চয়
ও
আর্থিক
ব্যবস্থাপনার কৌশল;
যা
একটি
জাতির
উন্নয়ন
ও
অগ্রগতির জন্য
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে একটি সার্কুলার জারি করে যে, স্কুলের শিক্ষার্থীরা নিজ নামে ব্যাংকে একাউন্ট ওপেন করতে পারবে। এই সার্কুলার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুসারে স্কুল ব্যাংকিং বা স্টুডেন্ট ব্যাংকিং-এর আওতায় 'ইয়ং স্টার' 'ফিউচার স্টার'... ইত্যাদি উদ্দীপনাসূচক নামে ব্যাংকগুলো চালু করে আকর্ষণীয় স্কিম। অত্যন্ত সহজ শর্তে ওপেন করা শুরু হয় শিক্ষার্থীদের নিজের নামে ব্যাংক একাউন্ট।
বর্তমানে আমাদের দেশে ৪০টিরও বেশি ব্যাংকে বিদ্যমান এই স্টুডেন্ট ব্যাংকিং স্কিম। এক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে সরকারি ব্যাংকের চেয়ে অনেকদূর এগিয়ে আছে প্রাইভেট ব্যাংকগুলো। ফলে গ্রামের তুলনায় এগিয়ে আছে শহরের শিক্ষার্থীরা। আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেহেতু এখনো বেসরকারি ব্যাংকগুলোর শাখা ততটা বিস্তৃত নয়; সেহেতু বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে সরকারি ব্যাংকগুলোকে। এগিয়ে যেতে হবে নিকটবর্তী প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বিস্তারিত বুঝিয়ে দিতে হবে শিক্ষকগণকে। বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে উত্সাহিত করতে হবে শিক্ষার্থীদেরকে। বাংলাদেশ ব্যাংকেও হতে হবে আরো সক্রিয়। শুধু একটি সার্কুলার দিয়ে বসে থাকলেই চলবে না। ব্যবস্থা করতে হবে নিয়মিত তদারকির। ব্যাংকগুলোকে আনতে হবে জবাবদিহিতার আওতায়। কেননা বড় বড় ব্যাংকগুলো বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকগুলোর শাখা পর্যায়ে স্কুল ব্যাংকিং-এর মত কার্যক্রমগুলোকে পাশ কাটানোর প্রবণতাই বেশি। স্কুল ব্যাংকিং সফল করার জন্য সবচেয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে শিক্ষামন্ত্রণালয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জারি করা যেতে পারে স্কুল ব্যাংকিং চালু করার আদেশ। শিক্ষার্থীদের নাম রেজিস্ট্রেশন করার ফরমে জুড়ে দিতে পারে তার নিজের ব্যাংক হিসাবের নম্বর (যদি থাকে) লিখার একটি কলাম। স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আনা যেতে পারে পুরস্কার-তিরস্কারের আওতায়। শহর এবং উপশহরে অবস্থিত এবং কিছু বাছাইকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে স্কুল ব্যাংকিং। একবার জাগিয়ে দিলে আমরা পারি এমন প্রমাণ আমরা বাংলাদেশের বাঙালিরা সারা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছি ১৯৫২ এবং ১৯৭১ সালে। আমাদের সচ্ছলতার জন্য, ভবিষ্যেক উজ্জ্বল করার জন্য, মজবুত আর্থিক ভিত্তি নিশ্চিত করার জন্য স্কুল ব্যাংকিং-এর মত কার্যক্রমের মাধ্যমে জাতিগতভাবে সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। দেশ ও জাতির দীর্ঘ মেয়াদি বৃহত্তর স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিবর্গ এখনই এ বিষয়ে সক্রিয় হবেন আশা করি।
লেখক : পি.এইচডি. গবেষক এবং অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা n
Email- md.rahamotullah52¦gmail.com
No comments:
Post a Comment