Sunday, July 6, 2014

শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ রক্ষা করুন



Samakal Main Logoসমকাল
http://www.samakal.net/2014/06/21/67384
প্রকাশ: ২১ জুন, ২০১৪
হোম>খোলা চোখে >শিক্ষার্থীদের খেলার মাঠ রক্ষা করুন
মো. রহমত উল্লাহ
সবাই জানেন ও মানেন_ ব্যাপক অর্থে শিক্ষা হচ্ছে 'সুস্থ দেহে সুস্থ মন।' সুশিক্ষার জন্য প্রয়োজন শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা। এজন্যই খেলাধুলাকে এখন বলা হয় সহশিক্ষা। অর্থাৎ খেলাধুলা শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ। খেলাধুলা ছাড়া শিক্ষার পরিপূর্ণতা অসম্ভব। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য প্রতিটি মানুষের, বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের প্রয়োজন নিয়মিত খেলাধুলা।

http://www.samakal.net/assets/images/news_images/2014/06/21/untitled-21_67384.jpg

খেলাধুলার এই গুরুত্ব অনুধাবন করেই শিক্ষার্থীদের পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে শারীরিক শিক্ষা নামে একটি পাঠ্য বিষয়। কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিশেষ করে শহরকেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তেমন কোনো আঙিনা বা খেলার মাঠ না থাকায় বাস্তবে এই ব্যবহারিক বিষয়টির চর্চা করার সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। ফলে আমাদের শহরকেন্দ্রিক শিক্ষার্থীরা চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধুলা তথা শারীরিক শিক্ষার অধিকার থেকে।
আসলে শুধু বই-খাতা আর ঘরোয়া খেলা দিয়ে সম্ভব নয় তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ। এ জন্য অবশ্যই খোলা জায়গায় তাদের খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। প্রতিটি সচেতন মানুষই স্বীকার করবেন এই বাস্তব সত্য। অথচ আমরা প্রতিনিয়তই দখল বা জবরদখল করে নিচ্ছি আমাদের সন্তান ও শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য আলো-বাতাসে খেলাধুলা করার প্রতিটি স্থান। এমনকি আপনার সরকারের সহায়তায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণের পরিকল্পনাতেও বিবেচনা করা হচ্ছে না শিক্ষার্থীদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় আলো-বাতাস ও খেলাধুলার স্থান সুরক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি! শহরকেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত খালি জায়গা নেই, সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও নিচের তলা ফাঁকা না রেখেই তৈরি করা হচ্ছে নতুন নতুন ভবন! শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক বর্তমানে ঢাকা শহরসহ বিভিন্ন উপশহরের অর্ধশতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে এমন নতুন ভবন নির্মাণের কাজ। অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে গিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রমাগত বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে আরও মারাত্মক দমবন্ধ পরিবেশ!
আমাদের সন্তানদের বৃহত্তর স্বার্থে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না এই অবস্থা। এ ব্যাপারে আমি নিজে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতরে মেইল করেছি একাধিক আবেদনপত্র (যদিও সেই মেইল করার অভিজ্ঞতা বড়ই তিক্ত)। কথা বলেছি উলি্লখিত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে। তিনি বললেন, নিচে ফাঁকা রাখার বিধান নেই। সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের এই একটাই ডিজাইন। আমি বললাম, শিক্ষার্থীদের স্বার্থে ঢাকা শহরের জন্য কি এই ডিজাইন সামান্য পরিবর্তন করা যায় না? জায়গাগুলো ভরাট হয়ে গেলে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না! তিনি বললেন, এসব করতে গেলে দশ বছর ঝুলে থাকবে ভবন নির্মাণের কাজ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু-কিশোরদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপনার দেওয়া বক্তব্য শুনে, আপনার লেখা পড়ে, আপনার আঁকা ছবি দেখে আমার মনে হয়েছে আপনি শিশু-কিশোর-কিশোরী এবং প্রকৃতিকে মন থেকেই ভালোবাসেন। তাই আপনার কাছে সবিনয় আবেদন, আপনি অতি শিগগিরই এমন একটি আদেশ দিন, যেন চলমান প্রকল্পসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিশেষ করে বিভিন্ন শহর এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কোনো ধরনের ভবন নির্মাণের সময় বহুতল ভিত ও নিচের তলা ফাঁকা রাখার।
অধ্যক্ষ, কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ, ঢাকা

No comments:

Post a Comment